রবিবার, ২৪ মে, ২০১৫

এক রাজ্যে এক রাজা ছিল…


এক রাজ্যে এক রাজা ছিল

প্রিয় বন্ধু, আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন আপনি? আমি আপনাকে নিয়ে আজ বেরিয়ে যেতে চাই এক অন্যরকম ভ্রমণে যাবেন আপনি আমার সাথে? এই ভ্রমণ আমাদের নিয়ে যাবে অনেক অনেকদিন আগের এক সময়ে, এক রাজ্যেকল্পনা করুন তো আপনি মরুর দেশের এক শহরে আছেন, শতশত মাইলের এক বিশাল মরুর বুকে গড়ে উঠেছে এক ছোট্ট শহর, এক মরুদ্বীপ এই রাজ্যে উচ্ছলতার কোনো কমতি নেই, এই রাজ্যে চুরি-ডাকাতি ছিল না বললেই চলে, এই রাজ্যে নারীরা ছিলেন সম্মানিত, এই রাজ্যে আইনের শাসন ছিল প্রত্যেকের জন্যে এক, সমানহোক সে ধনী কিংবা গরীব, এই রাজ্যে মানুষগুলো ছিল একে অপরের সহযোগী, সাহায্যকারী
আচ্ছা বন্ধু, এত চমৎকার একটা সমাজ, সেখানে নিশ্চয়ই একজন অসাধারণ নেতা ছিলেন, যার নেতৃত্বে সবকিছু হয়েছে হ্যাঁ, আসলেই ছিলেন কিন্তু সে রাজ্যে গেলে আপনি কোনো রাজপ্রাসাদ দেখতে পেতেন না, আপনি পার্থক্যই করতে পারতেন না কে রাজা আর কে রাজার প্রজা তাঁর পোশাক দেখেও আপনার বোঝার কোনো উপায় থাকতো না, তিনি কে আর কিইবা তাঁর পরিচয় সমাজের আর দশটা মানুষের মতোই ছিল তাঁর জীবন যাপন তিনি বাস করতেন ছোট একটা ঘরে, বিছানা ছিল চটের তিনি এক স্বচ্ছল সমাজের রাষ্ট্রপ্রধান, অথচ তাঁর নিজের জন্যে তিনি খুব অল্প সম্পদই রাখতেন তাঁর নিজস্ব উপার্জনই হোক আর জমানো অর্থই হোক, অধিকাংশই দান করে দিতেন অসহায় আর দরিদ্রদের মাঝে তিনি গরীব আর অভাবীদের শুধু সাহায্যই করতেন না বরং তিনি খুঁজতে বেরিয়ে যেতেন কার সাহায্য প্রয়োজন তা দেখার জন্যে তাঁর সময়ের মানুষগুলো তাঁর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, তাঁর মতো আর কেউ এত হাসতো না তাঁর মতো এত মহৎ, এত সৌহার্দ্যপূর্ণ, এত দয়াশীল, এত আপন আর কেউ ছিলেন না তিনি ছিলেন অগণিত মানুষের একজন নেতা, একজন ভাই, একজন পথ-নির্দেশক
বন্ধু, একটা প্রশ্ন আপনার মাথায় আসতেও পারে, আমরা এমনও তো কত মানুষ দেখি, যারা বাইরের জগতে একেবারে কিংবদন্তী, মহাপুরুষঅথচ ঘরের ভেতর ভীষণ উচ্ছৃঙ্খল, অত্যাচারী এই রাজাও আবার তেমন কেউ নন তো? একটা কথা প্রচলিত আছে, কোনো পুরুষের সম্পর্কে জানতে চাইলে নাকি তার স্ত্রীদের কাছে জিজ্ঞেস করতে হয় স্ত্রীরাই সবচেয়ে ভালো জানে এবার আসুন আমরা দেখি এই নেতার স্ত্রীরা তাঁর সম্পর্কে কী ভাবতেন
প্রত্যেক স্ত্রীই তাঁকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসতেন সর্বোত্তম সম্বোধনেই তাঁরা স্বামীকে ডাকতেন খুব কোমল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন তিনি ছিলেন সর্বাধিক দয়ালু তাঁরা একত্রে খেলা করতেন, মরুভূমিতে দৌড় প্রতিযোগিতা দিতেন একই পাত্র থেকে তাঁরা পানি খেতেন, একই পাত্র থেকে খাবার খেতেন কখনও স্ত্রীর মুখে নিজ হাতে খাবার তুলে দিতেন স্ত্রীদের দুঃখে তাঁদেরকে সান্ত্বনা দিতেন, নয়নের জল মুছে দিতেন কষ্ট-সঙ্গী হতেন মনোযোগ দিয়ে তিনি স্ত্রীদের কথাগুলো শুনতেন অভিযোগ সমূহ গুরুত্ব সহকারে নিতেন যে কোনো বিপদাপদে ছায়া হয়ে পাশে থাকতেন নিজের ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাতেন প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো তাঁদের সাথে আলাপ করতেন তাঁদের মতামতকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করতেন সাংসারিক কাজকর্মে তিনি সবসময়ই হাত লাগাতেন নিজের কাপড় নিজে ধোয়া, নিজের জুতো নিজে মেরামত করে নেয়া, ভেড়ার দুধ দোহন, জামা সেলাই করাএমন সব কিছুই করতেন যা তাঁর স্ত্রীদের জীবনযাত্রাকে সহজ করতো তিনি কখনও তাঁদের তিরস্কার করতেন না, তাদের সাথে চেঁচামেচি করতেন না
আচ্ছা বন্ধু, যিনি রাজ্যের রাজা তিনি তো থাকবেন নিজের কাজ নিয়ে অতি ব্যস্ত, রাজ্যের শিশুদের সময় দেয়ার মতো সময় কিংবা মানসিকতা কি তার থাকে? কিন্তু না, এই রাজা একটু অন্যরকম কাণ্ডটা দেখুন! একদিন তিনি বাইরে বের হলেন আর তখনই একটা বাচ্চা মেয়ে এসে তাঁর আঙুল ধরে টেনে নিয়ে গেলো রাজ্যের রাজা কিছুই মনে করলেন না মেয়েটি যেখানেই যাচ্ছে তিনি তার সাথে সাথে যাচ্ছেন মেয়েটি তাঁর সাথে গল্প করতে করতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকে রাজাও খুশিমনে ঘোরেন তার সাথে মেয়েটির সাথে খেললেন মেয়েটির খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাশ থেকে সরলেন না মেয়েটি যখন রাজাকে ছাড়লো, তখনও তাঁর মুখে হাসি লেগেই ছিল
একবার তিনি সালাতে সিজদাহ করছিলেন এমন সময় তাঁর দুই দৌহিত্র এসে বসে পড়লেন নানার পিঠে শুরু হয়ে গেলো তাঁদের পিঠের ওপরেই খেলা যতক্ষণ না তাঁরা খেলা শেষ করে চলে গেলেন, ততক্ষণ তিনি নড়লেন না আরেকবার তাঁর শিশু দৌহিত্রী তাঁর কাছে এলেন সালাত আদায়রত অবস্থায় সালাতে থেকেই তিনি তাঁকে কোলে তুলে নিলেন কোল থেকে নামিয়ে আবার সিজদায় গেলেন, আবার কোলে তুলে নিলেন এমনই ছিল শিশুদের সাথে তাঁর সম্পর্ক, তাঁর আন্তরিকতা
তিনি তাঁর সঙ্গী-সাথীদের এতটাই ভালোবাসতেন যে, তাঁর প্রত্যেক সাথীই মনে করতেন তিনিই বোধহয় রাজার সবচেয়ে কাছের মানুষ তিনি সমাজের সুবিধা-বঞ্চিতদের ব্যাপারে খুব বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতেন ইয়াতিম, বিধবা, বৃদ্ধ আর চাকরেরা ছিল তাঁর মনোযোগের একেবারে উপরের স্তরে নিশ্চিত করতেন তারা যেন তাদের সর্বোচ্চ অধিকারটুকু পায়
বিনয়ী আর দয়ালু রাজা সবার অন্তরটা একেবারে জয় করে নিয়েছিলেন এক বালক দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তাঁর সেবা করেছিলেন রাজার ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য অনেকটা এরকম, তিনি আমাকে কখনওউহশব্দটিও বলেননি আমি করেছি এমন কোনো কাজের জন্যে কখনও বলেননি যে, এটা কেন করলে? কিংবা আমি করিনি এমন কোনো কাজের জন্যে কখনও বলেননি যে, এটা কেন করোনি? তিনি ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী
আমরা তো নিজের পরিবার-পরিজনের সাথেও এতটা ভালো আচরণ করতে পারি না আরেকটা মজার ঘটনা বলি, বন্ধু! রাজার এই শিশু সহকারীর ভাইয়ের একবার শখের চড়ুই পাখিটি মারা গেলো খুব দুঃখে পেয়ে কাঁদছিল সে কথা শুনেই রাজা ছুটে গেলেন তাঁর শিশু সহকারীর বাড়িতে গিয়ে তার ভাইকে সান্ত্বনা দিলেন অনেক ভালো একটা সময় কাটালেন তার সাথে তারপর? যখন রাজা বেরিয়ে এলেন, শিশুটি হাসছিল
একদিকে এই রাজা এত কোমল, অন্যদিকে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে তিনি ভয়েরও কারণ ছিলেন বটে তাঁর কাছে অপরাধ মানে অপরাধই অন্যায় কেউ করেছে মানেই, তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে হোক সে বিরাট কোনো সাধু কিংবা রাজপুত্র সেসময় এক সম্ভ্রান্ত বংশের মহিলা চুরি করে ধরা পড়েছিল তাঁর কাছে কিছু লোক গিয়ে অনুরোধ জানালেন, মহিলার শাস্তি যেন মওকুফ করে দেয়া হয় নয়তো এই সম্ভ্রান্ত বংশের মুখে একেবারে চুনকালি লেগে যাবে রাজা এবার উঠে দাঁড়ালেন কড়া একটা ভাষণ দিলেন বললেন, আজ যদি তাঁর নিজের মেয়েও এই অপরাধ করতেন, তবু তিনি ছাড় দিতেন না
পরিবার সাথীদের প্রতি এতটা ভালোবাসা থাকা সত্ত্বেও, ন্যায়নিষ্ঠতা থেকে তিনি কখনও পিছপা হননি যদি কোনো মুসলিম অন্যায়ভাবে কোনো অমুসলিমদের সম্পদ হরণ করতো, তবে তিনি সে সম্পদ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করতেন
প্রিয় বন্ধু, এই মানুষটির মিশনের প্রাথমিক পর্যায়ের পথটা কিন্তু একেবারেই মসৃণ ছিল না সে সময়টাতে তাঁকে অজস্র শারীরিক মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে নিজের বাড়ি থেকে পর্যন্ত তাঁকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাঁর সমগ্র গোত্র অনুসারীদের নিয়ে অনাহারে দিন কাটাতে হয়েছে তাঁর অনুসারীদের মধ্যে অনেককেই জনসম্মুখে নির্যাতন করা হয়েছে
এমনকি অনেককে হত্যা করতেও শত্রুদের হাত কাঁপেনি কেন? কী কারণ? তাঁদের একটাই অপরাধতাঁরা মানুষকে সব ধরনের মিথ্যা উপাস্যকে ত্যাগ করতে বলেছিলেন বলেছিলেন সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, আসমান জমিনের একচ্ছত্র অধিপতি, জীবন মৃত্যুর নির্ধারকএক আল্লাহর দাসত্ব করতে, তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে এই মানুষটিকে ঘৃণ্য বর্বর আক্রমণ করা হয়েছিল এমন এক গ্রন্থ প্রচারের জন্যে যা দরিদ্রকে তার প্রাপ্য অধিকার দেয়, ধনীকে দরিদ্রের ওপর জুলুম করতে বাধা দেয়, জানিয়ে দেয় মা-বাবাই হলেন জান্নাত অর্জনের পাথেয়, আরও বলে নারীরা যথার্থ সম্মান পাবার অধিকার রাখে
এতকিছুর পরেও কিন্তু আল্লাহ বিজয় নির্ধারণ করে রেখেছিলেন তাঁর জন্যেই
যারা তাঁর পরিবারের স্বজনদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, তাঁর সাথীদের করেছিল অবর্ণণীয় অত্যাচারসেই মানুষ গুলোই দেখলো কেমন হতে পারে তাঁর দয়া, কতটা উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যায়ক্ষমানামক মহৎ গুণটিকে
একজন বিজয়ী প্রতাপশালী সেনাপতি যখন তার জয় করা রাজ্যে প্রবেশ করে, অহঙ্কার আর গর্বের ছোঁয়া থাকে তার প্রতিটি পদক্ষেপে কিন্তু ঠিক এখানেই তাঁর সাথে অন্যদের পার্থক্য তিনি রাজ্য বিজয় করেছিলেন ঠিকই কিন্তু বিজয়ী রাজার মতো প্রবেশ করেননি বরং তাঁর আচরণে ছিল অনুগত দাসের ছাপ একটা গাধার ওপর বসে ছিলেন তিনি আল্লাহর প্রশংসা আর কৃতজ্ঞতায় তাঁর মাথাটি ছিল অবনত ভীত সন্ত্রস্ত লোকেরা অপেক্ষা করছিল তাদের ভাগ্যে আজ কী ঘটে তা দেখার জন্য যারা তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করতে চেয়েছিল, যারা তাঁর ভালোবাসার মানুষ গুলোকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলসেই তাদের সাথে তিনি কী আচরণ করেন কিন্তু কী অদ্ভুত বিষয় এই মহান মানুষটি শুধুমাত্র একটা কুরআনের আয়াত শোনালেনআজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন তিনি সব মেহেরবানের চেয়ে অধিক মেহেরবান (সূরাহ ইউসূফ : ৯২)
বন্ধু, এবার কি আপনি আঁচ করতে পারছেন আমাদের এই উপাখ্যানের রাজা কে? আপনি মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, সংশয়বাদী কিংবা নাস্তিক যাই হোন না কেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলে দিতে পারি আপনি এই মানুষটির নাম শুনেছেন হ্যাঁ, এতে কোনো সন্দেহ নেই, তিনি আমাদের মতোই রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ, তবুও তিনি কোনো সাধারণ মানুষ ছিলেন না তাঁর সবকিছুই ছিল অতুলনীয় তাই তো তিনি তাঁর কাজের প্রতিফলন রেখে গেছেন তাঁর বন্ধু-বান্ধব, আশে-পাশের মানুষ আর অনুসারীদের মাঝে তাঁর প্রভাব এতই বিস্তৃত যে তাঁকে যে, বার্তার বার্তাবাহক করে পাঠানো হয়েছিল, তা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ শিখছে, চর্চা করে যাচ্ছে এতকাল পেরিয়ে গিয়েছে, তবু আজও তাঁর সাক্ষাতের কথা ভেবে মানুষের চোখে জল ঝরে, তাঁর সম্পর্কে জেনে প্রশান্তি পায়, কেন তাঁর জীবনকালে জন্ম হলো না, তা নিয়ে আফসোস করে আজও কোটি মানুষের অন্তরে তাঁর জন্যে প্রগাঢ় ভালোবাসা জাগরিত আছে, তাঁরা নিজের বাবা-মা-ভাই-বোনের চেয়েও মানুষটিকে বেশি ভালোবাসে তাঁর পথ অনুসরণ করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত পৃথিবীর অজস্র মানুষ হ্যাঁ, তিনি আর কেউ ননতিনি আমাদের প্রান প্রিয় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ (তাঁর প্রতি আল্লাহর শান্তি রহমাত বর্ষিত হোক) তিনি ছিলেন আল্লাহর সর্বশেষ সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল
তাঁর সম্পর্কে বিখ্যাত ফরাসি কবি লা মার্টিন একটি যথার্থ প্রশ্ন রেখে গিয়েছেন,
দার্শনিক, সুবক্তা, ধর্মপ্রচারক, আইনপ্রণেতা, যোদ্ধা, নতুন ধারণার উদ্ভাবনকারী, ধারণাকে বাস্তবে রূপদানকারী, বাস্তব বিশ্বাসের পুনরুদ্ধারকারী, বিশটি জাগতিক আর একটি আধ্যাত্নিক সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হলেন এই মুহাম্মাদ (সাঃ) মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব পরিমাপের সমস্ত মাপকাঠি বিবেচনা করে আমরা নিজেরাই নিজেদের প্রশ্ন করতে পারিরাসূলুল্লাহু (সাঃ) এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ আছে কি?”
চলুন বন্ধু, প্রশ্নটির উত্তর নিজের মনে ভাবতে ভাবতে আজকের মতো বিদায় নিই ভালো থাকুন বন্ধু আসসালামু আলাইকুম

রোদেলা শ্রাবণ @ahobaan.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন